রবিবার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০২:২৭ অপরাহ্ন

ইয়াবা বিক্রির টাকায় স্বর্ণ চোরাচালানে জড়াচ্ছে রোহিঙ্গারা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০২২
  • ১৬ পঠিত

ইয়াবা বিক্রির লাভের টাকায় মিয়ানমার থেকে স্বর্ণ আনছে রোহিঙ্গারা। পরে এসব স্বর্ণের বার গলিয়ে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্বর্ণালংকারের দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে। ইয়াবা ও স্বর্ণ আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে বেশ কয়েকটি রুট। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে দুই রোহিঙ্গা নাগরিককে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পেয়েছে র‌্যাব।

এসব অবৈধ স্বর্ণের ক্রেতা কারা সে বিষয়েও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। র‌্যাব বলছে, তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর ইয়াবা ও স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শনিবার (৩০ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থানাধীন ছলিমপুর ইউনিয়নের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের জঙ্গল ছলিমপুরে একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় আসমত উল্লাহ (২৪) ও ছহুরা খাতুন (৬৮) নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। সম্পর্কে তারা মা-ছেলে। ওই বাসায় তল্লাশি করে স্বর্ণের ৮টি বার, স্বর্ণের চেইন ৫টি, স্বর্ণের বালা একজোড়া, স্বর্ণের কানের দুল ৩ জোড়া, স্বর্ণের আঙটি ৩টি এবং স্বর্ণের ৪টি লকেট জব্দ করা হয়। উদ্ধার স্বর্ণের দাম প্রায় দেড় কোটি টাকা।

র‌্যাব জানায়, মিয়ানমারের নাগরিক মোজাহের আহমেদ তার স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ২০১২ সালে বাংলাদেশে আসেন। রোহিঙ্গা হওয়ার পরও তারা অসাধু উপায় অবলম্বন করে পাসপোর্ট বানান। সেই পাসপোর্ট ব্যবহার করে বাবা মোজাহের আহমেদ ও ছেলে আসমত উল্লাহ ২০১৪ সালে সৌদি আরব যান। ২০২০ সালে অবৈধভাবে থাকায় স্থানীয় পুলিশ আটক করে তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। দেশে আসার পর বাবার মৃত্যু হয়। পরে ইয়াবা ও স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন মা ও ছেলে। তারপর থেকে চোরাচালানের সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন তারা। তাদের সিন্ডিকেটে রয়েছে ১০ জনের মতো সদস্য।

তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে র‌্যাব জানায়, মিয়ানমারের মংরু থেকে সাগর পথে টেকনাফ ও উখিয়ার বালু খালি হয়ে দেশে ঢোকে স্বর্ণ ও মাদকের চালান। এই চোরাচালান চক্রের অনেক সদস্যদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হলেও দেশের বাইরে তাদের অবস্থান হওয়ায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। কয়েকজনের অবস্থান জানা গেছে, তারা মিয়ানমারে। চক্রের সদস্যরা ইয়াবা এবং স্বর্ণের প্রতিটি চালান সংগ্রহ করে নির্ধারিত জায়গায় পৌঁছে দেয়। স্বর্ণগুলো মিয়ানমার থেকে আনার পর গলিয়ে তা চট্টগ্রামের বিভিন্ন নামিদামি স্বর্ণালংকারের দোকানে বিক্রি করা হতো বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন গ্রেফতারকৃতরা। এছাড়া স্বর্ণের ক্রেতা কারা এসব বিষয়েও চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

র‌্যাব ৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইয়াবা বিক্রির লাভের টাকা দিয়ে রোহিঙ্গারা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে স্বর্ণের বার ও বিস্কুট উখিয়া ও টেকনাফ ক্যাম্পসমূহে পাচার করে আসছে। পরে তা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিচ্ছে।’

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘ইয়াবা কাদের কাছে পৌঁছে দিতো, সে বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। এছাড়া মিয়ানমার থেকে স্বর্ণ আনার পর সেসব স্বর্ণ কোথায় বিক্রি করতো সে বিষয়েও আমরা বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। সে অনুযায়ী তদন্তের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Let's check your brain 65 + = 68

একই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved 2022 CHT 360 degree