শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বান্দরবানে কেএনএফ সন্ত্রাসী কর্তৃক সেনাবাহিনী হত্যার তীব্র নিন্দা পিসিএনপি’র দীঘিনালায় বাবুছড়া ৭ বিজিবির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রীতিভোজ রুমায় কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ক্যাম্প দখল: আইইডি বিস্ফোরণে ১ সেনা সদস্য শহিদ টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ১ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার পেকুয়ায় ছেলের সাথে অভিমান করে মায়ের আত্মহত্যা খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের উদ্যোগে উপহার সামগ্রী বিতরণ স্বামীকে প্রায় মারেন সানাই মাহবুব, এবার করলেন ঝাড়ুপেটা দেশের ৫২তম প্রস্তাবিত সাড়ে ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা আজ বিশ্বকাপে ভারত যাবে কি না আইসিসিকে জানিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান টেকনাফে ৫০ হাজার পিস ইয়াবা ও অস্ত্র জব্দ, ডাকাত সর্দার সহযোগীসহ আটক

কক্সবাজারে প্রাপ্য টাকা নিয়ে বিপাকে মুক্তিযোদ্ধার কন্যা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৮ পঠিত

কক্সবাজার সৈকত সংলগ্ন ড্রাগন মার্কেটে নিজের মালিকানাধীন দুইটি দোকানের ভাড়া ও জামানতের টাকা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মালিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধার কন্যা রুপা পাশা। লিখিত চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ভাড়া দিয়েও ভাড়া পাচ্ছেন না তিনি। আইনের আশ্রয় নিয়েও হুমকির শিকার। অদৃশ্য ক্ষমতার ইশারায় গায়ের জোরে টাকা নিয়ে যাচ্ছে অন্যজন। সমঝোতার বৈঠক করেও সমাধান হয়নি।

রুপা পাশা কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ার বাসিন্দা, বিশিষ্ট পর্যটন উদ্যোক্তা নুরুল কবির পাশার স্ত্রী। তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল ইসলাম।

এ সময় ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে যোগসাজশে মোয়াজ্জেম হোসেন শাওন নামক ব্যক্তি ভাড়ার টাকা আত্মসাত করছেন বলে অভিযোগ রুপা পাশার।

অভিযুক্ত মোয়াজ্জেম হোসেন শাওন চট্টগ্রামের বাসিন্দা। বিএনপির রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত। কিন্তু কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তার গভীর সখ্যতা। যে কারণে তিনি ‘ধরাকে সরাজ্ঞান’ মনে করেন।

রুপা পাশা বলেন, ২০১৮ সালের ১১ মার্চ কক্সবাজার শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল করের কাছ থেকে সুগন্ধা পয়েন্টের ড্রাগন মার্কেটের ৫ ও ৬ নং দোকান ২০ লাখ টাকায় নোটারীমূলে ক্রয় করি। যার রোটারী নং-১৫১। দিদারুল আলম এবং আব্দুল হামিদ নামক ২ ব্যক্তিকে মাসিক ২৫ হাজার টাকা হারে চুক্তিনামার মাধ্যমে দোকান দুইটি ভাড়া প্রদান করি। চুক্তি মতে কয়েক মাস ভাড়া দেয়।

হঠাৎ আমাকে ভাড়া না দিয়ে মোয়াজ্জেম হোসেন শাওনকেই ভাড়ার টাকা দিচ্ছে। শাওন নাকি দোকানের মালিক!, তাই আমাকে আর ভাড়া দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে ভাড়াটিয়ারা। এমনকি জামানতের টাকা ফেরত চেয়ে উল্টো লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে।

এ বিষয়ে গত ১৭ জানুয়ারি উভয়পক্ষে সমঝোতার বৈঠক হয়। যেখানে ভাড়াটিয়া দিদারুল আলমের ভায়রাসভাই রাশেদুল ইসলাম ডালিমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

সিদ্ধান্ত মতে, ভাড়াাটিয়াদের (জানুয়ারী ২০২৩ পর্যন্ত) ৫ লাখ ১০ হাজার টাকার মধ্যে সালিশ কারকদের অনুরোধে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা মওকুফ করে দেওয়া হয়। যার মধ্যে ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে লকডাউনে দুই মাসের ভাড়া অন্তর্ভুক্ত আছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে দোকান মালিক রুপা পাশাকে দোকান দুটি খালি করে বুঝিয়ে দিয়ে তাদের জামানতের ১০ লাখ টাকা হতে ২ লক্ষ টাকা কর্তন করে ৮ লাখ টাকা ভাড়াটিয়াকে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর পরদিন আদালতে গিয়ে উভয় পক্ষ ওই ঘটনায় মালিকপক্ষের দায়েরকৃত মামলাটির আপোশ মিমাংসের সিদ্ধান্ত হলেও বৈঠকের একদিন পর গৃহীত সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের কব্জায় দোকান দুটি দখলে রেখে উল্টো জামানতের টাকা ফেরত দিতে দোকান মালিকের স্বামী নুরুল কবির পাশাকে নানাভাবে হুমকি এবং চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন দিদার এবং হামিদ।

এদিকে, ভাড়াটিয়ার অবৈধ আচরণ এবং হুমকি থেকে বাঁচতে আদালতের আশ্রয় নেন দোকান মালিক রুপা পাশা। কক্সবাজার সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে বাড়ী ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আদালতে রেন্ট কন্ট্রোল অর্ডিন্যান্স এর ১৯(১) ধারা মতে বাড়ী ভাড়া মিচ মামলা ১২/২০২২ দায়ের করেন।

তবে মামলার পর ভাড়াটিয়া এবং তাদের সঙ্গে থাকা প্রভাবশালীরা রুপা পাশা এবং তার স্বামীকে হুমকি দিচ্ছে। অথচ প্রতিবছর দোকান দুটির আয়কর প্রদান করে আসছেন রুপা পাশা।

রুপা পাশার স্বামী বিশিষ্ট পর্যটন উদ্যোক্তা নুরুল কবির পাশা বলেন, আমার শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল ইসলাম অনেক স্বপ্ন নিয়ে নিজের মেয়ের নামে দুটি দোকান ক্রয় করে দিয়েছিল। এখন তা আমরা হারাতে বসেছি। এই বিচার নিয়ে বিভিন্ন জনের কাছে গেলেও কোন সুরাহা এখনো পাইনি। আমার স্ত্রীর নামে পৌর আওয়ামী লীগের নেতা উজ্জল কর এর কাছ থেকে নগদ ২০ লাখ টাকা দিয়ে এই দোকান দুটি ক্রয় করেছিলেন। এখন মালিক বনে গেছে আরেকজন । আমাকে ভাড়া দিচ্ছে না গত কয়েক মাস ধরে।

ভাড়াটিয়া দিদারুল আলম বলেন, দোকানটি রূপা পাশার কাছ থেকে নিয়েছিলাম। ৭- ৮ মাস আগে মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী শাওন আমার দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়। শাওন প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকটা বাধ্য হয়ে তার সাথে সমঝোতা করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি।

৬নং দোকানের ভাড়াটিয়া আব্দুল হামিদ বলেন, প্রথমে আমরা পল্লবের কাছ থেকে দোকান নিয়েছিলাম। পরে শাওন মালিকানা দাবি করলে আমার নিরুপায় হয়ে তাকে ভাড়া প্রদান করছি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী শাওনকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

দোকান বিক্রয়কারী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল কর বলেন, আমার দখল স্বত্ত রুপা পাশাকে বিক্রি করে দিয়েছি। বিক্রির পর রূপা পাশা দোকান দুুটি ভাড়া দিয়েছেন। কিন্তু এতদিন পর কেন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তা জানা দরকার।

উল্লেখ্য, নিজের দোকানের ভাড়া নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কন্যা রুপা পাশা এবং তার স্বামী নুরুল কবির পাশা। অধিকার ফিরে পেতে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Let's check your brain + 16 = 25

একই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved 2022 CHT 360 degree