খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সম্প্রসারিত ভবনের কেন্ডিলিবারের ছাদ ধসে শ্রমিক হতাহতের ঘটনায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। মর্মান্তিক প্রাণহানির এই ঘটনার পর ঠিকাদার লাপাত্তা রয়েছে।
শনিবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্বদানকারী খাগড়াছড়ি সদর সেনা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর রিয়াদুল ইসলাম এ উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
এ দিকে শ্রমিক হতাহতের অনাকাঙ্খিত ঘটনার কারণ উদঘাটন ও দায়-দায়িত্ব নির্ধারণের শনিবার রাতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়াকে প্রধান করে গঠিত কমিটিকে সাত কার্যদিবসে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, খাগড়াছড়ি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও খাগড়াছড়ি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী।
এদিকে নির্মাণ কাজের ঠিকাদারকে এবং প্রকল্পের ব্যয় কত টাকা এ নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়ে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের কেউই মুখ খুলছে না।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আরিফুর রহমান জানান, ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি। আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে পুলিশ একটি জিডি করে রেখেছে।
প্রসঙ্গত শনিবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্মাণাধীন সম্প্রসারিত ভবনের কেন্ডিলিবারের ছাদ ধসে দুই নির্মাণ শ্রমিক নিহত এবং আরো ৫ জন আহত হন।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত ৬ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে সাজ্জাদ হোসেন নামে একজন মারা যান।
সাজ্জাদ খাগড়াছড়ি পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে কলেজ গেট এলাকার মো. আমিনের ছেলে বলে জানা গেছে। সন্ধ্যায় ঢালাইয়ের নিচে চাপা অবস্থায় আরো একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। সে বাগেরহাট জেলার শিবপুর ইউনিয়নের সোহরাব হোসেনের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম সিকদার(২৮)।
এই উদ্ধার অভিযান চলে শনিবার রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত।
অভিযোগ রয়েছে, শনিবার বন্ধের দিন হওয়ায় ছাদ ঢালাইয়ের সময় ঘটনাস্থলে কোন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন না। ঢালাইয়ে লোহার খুটির পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে ঠেস দেওয়া হয়েছিল। সেন্টারিং সিস্টেম ছিল ক্রটিপূর্ণ। ঘটনার পর জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমার নাম্বারে একাধিক বার কল দিলেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া গেছে। সহকারী প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার এবং জিকু চাকমার মোবাইলে কল দিলে তাদের নাম্বারও বন্ধ পাওয়া যায়।
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার রাজেশ বড়ুয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, ছাদটি নির্মাণের যে সেন্টারিং তৈরি করা হয়েছে সেটি দুর্বল ছিল। ঢালাই কাজ চলাকালীন বাঁশে সেন্টারিংটি ভার নিতে পারেনি। তাই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
খাগড়াছড়ি সেনা সদর জোনের উপ অধিনায়ক মেজর রিয়াদুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে দেখছি ছাদের সেন্টারিংয়ের ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।