টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়ায় বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাসের অংক কষতে না পারায় ৫ম শ্রেণির দুই শিশু শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত ও জখম করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক মো. শামসুদ্দীনের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। আহত রাখাইন দুই শিক্ষার্থী হল- মো মো ছেন এবং ক্য জ লাং।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাতে এ ঘটনার কথা জানান আহত শিক্ষার্থী মো মো ছেনের বাবা চেন ছিন মং। তিনি জানান, সকাল ১০টার দিকে মেয়েকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে যাই। গিয়ে মো মো ছেন ও ভাগিনা ক্য জ লাংকে রক্তাক্ত ও জখম অবস্থায় পাই। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাসায় নিয়ে আসা হয়। মারধরের ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে উল্টো ধমক দেয় এবং মেরেছি তো কি হয়েছে? বেশি বাড়াবাড়ি করলে বিদ্যালয় থেকে তাড়িয়ে দেব।’
চেন ছিন মং আরো জানান, এ ঘটনায় টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।
এ ঘটনার পর থেকে তার মেয়ে ও ভাগিনা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার জন্য কোচিং করানো হয় স্কুলে। সেখানে মাসিক টাকা দিতে হয়।কিন্ত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিভাবক কোচিং না করিয়ে গৃহ শিক্ষক দিয়ে পড়ান। এই ক্ষোভে ক্লাসের অংক কষতে না পারার অজুহাতে টেবিলের নিচে শিক্ষার্থীদের মাথা রেখে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত ও জখম করে।
শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, প্রায়ই নানা অজুহাতে তাদের শারীরিক নির্যাতন করেন প্রধান শিক্ষক। শিশুদের ওপর শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শামসুদ্দিনের মুঠোফোনে বার বার ফোন করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. এমদাদ হোসাইন চৌধুরী জানান, বিষয়টি আমরা অবগত। আজ বুধবার (৩০ নভেম্বর) শিক্ষা অফিসের গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উপজেলা শিক্ষা অফিসকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।