বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দালাল-বেঈমানের জন্মদাতা কুখ্যাত ইব্রাহিমকে পাহাড়ি জনগণ কখনই ক্ষমা করবে না! টেকনাফে আদালতের আদেশ অমান্য করে জমি দখলের চেষ্টা খাগড়াছড়িতে অটোরিকশা চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার থানচি বাজার সড়কের বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে ফিলিস্তিন সংকট:বেসামরিক নাগরিকদের গাজা ত্যাগের জন্য সময় নির্ধারণ করাই ইসরাইলের উদ্দেশ্য কুতুবদিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা ইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করলো তুরস্ক মাস্ক পরে অনুশীলনে বাংলাদেশ, দিল্লিতে ম্যাচ নিয়েও শঙ্কা গর্জনিয়ায় পানিতে ডুবে হেফজখানার ছাত্রের মৃত্যু পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের রানের পাহাড়

দুই বছরেও শেষ হয়নি থানচিতে সড়ক নির্মাণ কাজ, ১২০ পরিবারের দুর্ভোগ

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২২
  • ২৭ পঠিত

বান্দরবানের থানচি-আলীকদম সড়ক হতে ঐতিহ্যবাহী থানচি হেডম্যান পাড়া যাওয়ার (অভ্যন্তরীণ) সড়ক নির্মাণ কাজ দুই বছর ধরে অসম্পূর্ণ রেখেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এতো ভোগান্তির শিকার থানচি হেডম্যান পাড়ার ১২০টি পরিবার। একইসাথে বিশুদ্ধ পানির অভাবে পড়েছে স্থানীয় পাড়াবাসী।

চলমান শুকনো মৌসুমে কার্পেটিং নির্মাণ কাজ না করলে সামনে বর্ষা এ ভোগান্তি বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন উপকারভোগীদের।

ঐতিহ্যবাহী থানচি হেডম্যান পাড়া থেকে থানচি উপজেলা সদরে যাওয়ার এক মাত্র প্রধান সড়ক এটি। ২০২১ সালে শুকনো মৌসুমে ঠিকাদার কর্তৃক
সড়কের পুরানো ইট তুলে অর্ধেক রাস্তা উপর নতুন ইটের টুকরা অংশ ফেলা হয়। অপর দিকে পুরোনো ইটের সলিং উঠানো সময় ঠিকাদার প্রত্ষ্ঠিান পাড়ায় বিশুদ্ধ পানীয় সরবরাহকৃত (জিএসএফ) পাইপ লাইনগুলো মূল লাইন থেকে বিছিন্ন করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ না হওয়া (জিএসএফ) পাইপ লাইন ও সংযোজন করার সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পাড়াবাসীদের দীর্ঘ সময় বিশুদ্ধ পানীয় জলের স্থানীয় ঝিড়ির থেকে নতুন কূয়া করে সংগ্রহ করতে হয়েছে। গত দুই বছর পর্যন্ত এমন অবস্থা চলতে হয়েছে থানচি হেডম্যান পাড়ার ১২০টি পরিবারের সদস্যকে।

পাড়ার প্রধান কারবারি বাথোয়াইচিং মারমা জানান, আমাদের পাড়া ১২০টি পরিবার রয়েছে। ছোট বড় স্কুল শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৬০০ জনসংখ্যা। তাদের ভোগান্তি কথা চিন্তা করে কার্পেটিং কাজটি অতি দ্রুত করা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ঠদের সূত্রে জানা যায়, ২০১১-১২ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) অর্থায়নে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ের এক কিলোমিটার রাস্তা (এইচবিবি) ইটের সলিং নির্মাণ করেন। একই অধিদপ্তর বান্দরবান জেলা কার্যালয় হতে একই স্থানে ২০২১-২২ অর্থসালে ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ের সড়কের কার্পেটিংয়ের জন্য নির্মাণের টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বান্দরবান জেলা বালাঘাটা বাসিন্দা রতন সেন এন্টারপ্রাইজকে এই বরাদ্দের কাজা দেয়া হয়।

বান্দরবানে বাসিন্দা বিএনপি নেতা আবদুল মান্নান, নুরুল ইসলাম, জেএসএস সভাপতি থানচি উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা তিনজনের যৌথ শেয়ারে ১০ শতাংশ লাভে কার্পেটিং নির্মাণ কাজটি ক্রয় করেন রতন সেন হতে ।

এলজিইডি ও ঠিকাদার সংস্থা এর কাজের চুক্তিতে জুন ২০২১-জুন ২০২২ এক বছর মেয়াদে নির্মাণ কাজের শেষ করার কথা থাকলেও এখনো কোন কাজ শেষ হয়নি । ক্রয়ের সূত্রে যৌথ ঠিকাদার সংস্থা কাজ শুরু করেন ২০২১ সালে জুন মাসের। জুন মাসে ২০-২৫ দিন নির্মাণ কাজ করে ফেলে রেখে যায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও হেডম্যান পাড়া বাসিন্দা মংচথোয়াই মারমা (৬৬) জানান, আমাদের পাড়ায় শিশু শ্রেণির হতে শুরু করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়ুয়া প্রায় দুইশত ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তারা প্রতিদিন এ রাস্তায় দিয়ে স্কুলের আসা যাওয়া করে থাকেন। এছাড়াও সরকারি চাকরিজীবী, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা কর্মী, গণ্যমান্য অনেকে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। এ সড়কের কাজ নির্মাণ কাজ শেষ না করায় আমরা বিশুদ্ধ পানির মগক ঝিড়ির থেকে কূয়া করে সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এ চরম ভোগান্তির কথা কাকে বলবো।

পাড়ার বাসিন্দা দোঅংপ্রু মারমা ৬৪ জানান, যাতায়াতের চেয়ে বিশুদ্ধ পানির জন্য বেশি কষ্টদায়ক। বর্তমান শুকনো মৌসুমে মধ্যে সড়কের কার্পেটিং নির্মাণ কাজ শেষ না করলে আরও এক বছর কষ্ট করতে হবে।

থানচি হেডম্যান পাড়া বাসিন্দা মংসাগ্য মারমা, সাঅংপ্রু মাস্টার বলেন, রাস্তা থেকে ইট তুলে নেয়ার এবং রাস্তা কাজ না করায় বিশুদ্ধ পানির ও যাতায়াতে আমাদের পাড়াবাসী কষ্ট পাচ্ছে।

একই পাড়ার বাসিন্দা উক্যনু মারমা বলেন, ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার সকলের জ্ঞানহীন কাজ করার পাড়াবাসীদের জুমের উৎপাদিত ফসল বহনের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এছাড়াও বাজার থেকে চাউল সার, ভারী বস্তা গুলোও মানুষ দিয়ে বহন করতে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কাজের তদারকিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জাকের হোসেন বলেন, কাজের গুনগত মান ভালো করতে হলে শুকনো মৌসুমে কাজ শুরু করতে হবে। পাড়াবাসীদের দাবী যথাযথ যুক্তি রয়েছে। ঠিকাদার সংস্থা যদি কাজ শুরু না করে তাহলে আগামী জুনের প্রকল্প ক্লোজ করলে পাড়াবাসীদের দাবি বেহেস্তে চলে যাবে।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক আবদুল মান্নান বলেন, বর্ষাকালে কার্পেটিং কাজ না করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিযেছিলেন তাই করা হয়নি। তাছাড়া আমরা মাটি কাটা, বালুর ফিলিং, কংক্রিট বিছানোসহ মোট ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কাজের বিপরীতে কোন রানিং বিল পেমেন্ট করেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাই এই সড়ক নির্মাণ কাজ একবছর ফেলে রাখতে হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ( এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইমদাদুল হক বলেন, আমাদের অধিদপ্তরে উক্ত সড়কের জন্য গত জুন থেকে যথেষ্ট পরিমাণ বরাদ্দ আসে। তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পেমেন্টে না নেয়ার দিতে পারিনি। চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের বলা হয়েছে বিল নিয়ে কাজ করেন। তারা আগামী ডিসেম্বর মাসের কাজ শুরু ও সমাপ্ত করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Let's check your brain 80 − = 76

একই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved 2022 CHT 360 degree