সবুজ পাহাড়ে ঘেরা পর্যটন নগরী খ্যাত জেলা বান্দরবান। এই জেলায় প্রতিবছর আগমন ঘটে ভ্রমণ পিপাসুরা। এতে পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলো। ছোট বড় পাহাড় ও ঝিরি ডিঙিয়ে ছুটে চলে নাফাখুম, বগালেক, আমিয়াকুম, দেবতাকুমসহ নানান পর্যটন স্পটে। সবশেষে ফিরে আসে প্রাণকেন্দ্রীক বান্দরবান শহরে।
এই শহর আগের তুলনায় চিত্র পালটে গেছে কয়েকদিন ধরে। রাতের আধারে প্রাণ মূল সড়কের বাতির আলো না পড়লেও এখন তা দৃষ্টিনন্দন সড়ক বাতিতে রাতে অন্যান্য আলোতে রুপ নেয় বান্দরবান। আলোতেই প্রতিফলিত হয় সড়কগুলো। জমে উঠে আড্ডা মুখরিত হয় সড়ক দু পাশে। এক কথায় যাকে বলা হয় নতুন রুপে আলোকিত হয়ে উঠেছে জেলা শহর বান্দরবান।
শহরবাসীরা জানান, পৌরসভা এলাকায় সড়কের দু’পাশে দৃষ্টিনন্দন সড়কবাতি স্থাপনের ফলে পালটে যাবে শহরের চিত্র। সড়কের দু’পাশে রাতে আধারে জ্বলবে আলোকিত আলো। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি যানবাহন ও পর্যটকরা রাতের শহর ঘুরে বিমোহিত হবে। তাছাড়া এমন উদ্যেগ নেওয়াতেই পৌরসভা ও পার্বত্যমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শহরবাসিরা।
জানা গেছে, বান্দরবান বাসষ্ট্যান্ড থেকে সার্কিট হাউজ পর্যন্ত জেলা শহরের চিত্র বদলাতে সড়কের দু’পাশে স্থাপন করা হবে দৃষ্টিনন্দন বাতি (ষ্ট্রিট লাইট) । এই স্ট্রিট লাইট উদীয়মান পন্য এবং পরিবেশ বান্ধব পন্য। মূলত এই লাইটগুলো বড় সড়কের দু’পাশে মানুষের যাতায়াত ও সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য স্থাপন করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নের ও বান্দরবান পৌরসভা বাস্তবায়নে শহরকে আধুনিক রুপে ধারণ করতে এই উদ্যেগটি নেওয়া হয়। এই দৃষ্টিনন্দন বাতি প্রাথমিকভাবে ১শত ৫০ টি স্থাপন করা হবে। পরবর্তীতে পুরো শহর জুড়ে আধুনিক জেলা হিসেবে রুপ নিতে ধাপে ধাপে স্থাপন করা হবে এই দৃষ্টিনন্দন বাতি।
ঘুরতে আসা পর্যটক কামাল, অভি, মৌমিতা সাথে রাত্রীকালীন এক চায়ের আড্ডায় কথা হয়। তারা জানিয়েছেন, চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। এই সবুজের বুকের মেঘের খেলা দেখতে বান্দরবানের সুযোগ পেলে দল বেধেঁ ছুটে আসেন ঘুরতে। পাহাড়ের প্রকৃতি দেখতে কোন মৌসুম বাদ দেননি। শুধু তাই নয় রাতে এই দৃষ্টিনন্দন সড়কের বাতি দেখে তারা আরো আনন্দ পেয়েছেন। এই বাতি ঢাকা শহরে দেখলেও বান্দরবানে আধুনিকভাবে ছোঁয়াতেই আরো বিমোহিত হয়েছেন। তবে এটি রক্ষণাবেক্ষন করার আহ্ববান জানান তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বান্দরবান পৌরসভা কার্যালয় থেকে তহজিংডং পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে স্থাপন করা হয়েছে ২৯টি দৃষ্টিনন্দন বাতি (ষ্ট্রিট লাইট)। মাটি তলদেশ থেকে বাতি খন্ড উচ্চতা প্রায় ১৫ ফুটের মতন। খন্ডের চূড়ায় বসানো রয়েছে ৫টি লাইট। রাতের অন্ধকার আলোকে আলোকিত করতে পারদ্বর্শী। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু পাঠাগার সড়কের এসব বাতি বসানো প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
পৌরসভা তথ্যনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের অধীনের বাসস্ট্যান্ড থেকে সার্কিট হাউজ পর্যন্ত স্থাপন করা হবে ১৫০ টি দৃষ্টিনন্দন বাতি। বর্তমানে পৌরসভা হতে জেলা প্রশাসক কার্যালয় পর্যন্ত স্থাপন করা হয়েছে মোট ২৯টি। কয়েকটি বাতির বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের প্রক্রিয়াধীন। তবে বরাদ্ধ কত অর্থের পরিমান হবে সে ব্যাপারের এখনো জানায়নি পৌরসভা কতৃপক্ষ।
বান্দরবান পৌরসভা ভারপ্রাপ্ত মেয়র সৌরভ দাশ শেখর বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি নির্দেশনায় পৌর এলাকাকে আধুনিক শহর রুপান্তর করতে এই উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে। যাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশপাশি পর্যটকরা রাতে শহর ঘুরতে বিমোহিত হবে। তাছাড়া বান্দরবান জেলাকে অনান্য জেলা থেকে স্মার্ট জেলা হিসেবে গড়ে তোলা হবে।