তিন পার্বত্য জেলায় নিরাপত্তার জন্য আর্মড পুলিশের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন (পার্বত্য ব্যাটালিয়ন) গড়ার জন্য প্রায় এক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এই ৩ পার্বত্য জেলায় ব্যাটালিয়নগুলো গড়ে তোলা হবে। প্রতিটি ব্যাটালিয়নে থাকবে ৭শ থেকে ৮শ পুলিশ সদস্য ।
প্রস্তাবিত প্রকল্প অনুযায়ী বান্দরবানে ৩০৭ কোটি ২৫ লাখ, রাঙ্গামাটিতে ৩৮৮ কোটি ১২ লাখ ও খাগড়াছড়িতে ২৯২ কোটিসহ মোট ৯৮৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা প্রকল্পব্যয় ধরা হয়েছে। সরকারি (জিওবি) তহবিল থেকে এ অর্থ দেওয়া হবে। ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে চলতি মাসের (সেপ্টেম্বরের) ১ তারিখ থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।
জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন বলেন, ‘তিন পার্বত্য জেলায় আমাদের একটি প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্পসংক্রান্ত কাগজপত্র ইতিমধ্যে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রস্তাব আকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো হয়েছে। শান্তি চুক্তি অনুযায়ী যেখান থেকে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে, সেখানেই ব্যাটালিয়নগুলো স্থাপন করা হবে। নতুন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য এসব স্থাপনা হচ্ছে। প্রতি ব্যাটালিয়নে ৭শ থেকে ৮শ পুলিশ সদস্য থাকছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় ১৮ আর্মড পুলিশ মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন রাঙ্গামাটি, ১৯ আর্মড পুলিশ মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন বান্দরবান এবং ২০ আর্মড পুলিশ মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন খাগড়াছড়ির সদর দপ্তর নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে ১৮ ব্যাটালিয়নের আঠার মাইল ক্যাম্প, ১৯ ব্যাটালিয়নের রাবার বাগান ক্যাম্প ও ২০ ব্যাটালিয়নের পুরাতন পঙ্খিমোড়া ক্যাম্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
এসব স্থানে ভৌত-কাঠামো নির্মাণের জন্য সরকার একটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সমতল ভূমি না হওয়ায় এসব এলাকায় নির্মাণকাজে বেশ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার বলেন, ‘সরকারি দপ্তরগুলোর কাজ সাধারণত গণপূর্ত অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করে থাকে। পার্বত্য তিন জেলায় স্পেশাল ব্যাটালিয়নের জন্য ভৌত-কাঠামোর কাজ গুরুত্বের সঙ্গে বাস্তবায়ন করা হবে। দক্ষ প্রকৌশলীদের এই কাজে সম্পৃক্ত করা হবে।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তির আলোকে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন পার্বত্য জেলার সেনাক্যাম্প সরিয়ে নেওয়া হয়। দুর্গম ও পাহাড়ি হওয়ায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পাশাপাশি মাদকের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই পার্বত্যাঞ্চল। রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে পার্বত্য জেলা পুলিশের পক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা কঠিন। এই তিন জেলায় স্পেশাল ব্যাটালিয়ন বসানো হলে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সূত্র: দেশ রূপান্তর