সচেতন বাঙালি সমাজের প্রতিরোধের মুখে নাগরিক উদ্যোগের একটি প্রতিনিধি দল বান্দরবানে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে গিয়েছে। আজ শনিবার পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী এ দলটির বান্দরবান জেলার লামা উপেজেলার আজিজনগরে যাওয়ার কথা ছিলো।
জানা যায়, লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ডলুছড়ি মৌজায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ভুমি দখল, পাল্টা দখল নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিতর্ক চলছিল। এরই অংশ হিসাবে শনিবার(১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় নাগরিক উদ্যোগের ব্যানারে একটি দল লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের জায়গা পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে লামা সরই প্রবেশের চেষ্টা চালায়। নাগরিক উদ্যোগের সদস্যদের আগমনের খবর স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে স্থানীয় বাঙ্গালীরা। নাগরিক উদ্যোগের আগমন ঠেকাতে লামা সরই ভুমি উন্নয়ন অধিকার রক্ষা পরিষদের ব্যানারে স্থানীয় বাঙালিরা ক্যাজু পাড়া, হাসনা ভিটা, ফাইতং রাস্তার মাথা, কম্পনিয়াসহ বিভিন্ন স্পটে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। নাগরিক উদ্যোগের প্রতিনিধি দল সরই এলাকায় বাঙালিদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভের আগাম সংবাদ পেয়ে চট্টগ্রামের লোহাগাড়াস্থ ইনসাফ রেস্টুরেন্টে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। পরে নাগরিক উদ্যোগের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা অবস্থার বেগতিক দেখে সরই এলাকার কিছু উপজাতীয় যুবকদের সাথে গোপন বৈঠক শেষ করে দ্রুত লোহাগাড়া ত্যাগ করেন।
লামা ভুমি উন্নয়ন রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক নুরুল আলম জানান, সরই ইউনিয়নের ডলুছড়ি মৌজায় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ভূমি দীর্ঘ দিন ধরে জবর দখল করার পাঁয়তারা চালিয়ে আসছে স্থানীয় রংধজন ত্রিপুরা, পদরাম ত্রিপুরা, ও মতি ত্রিপুরার নেতৃত্বে একটি ভূমি দস্যু চক্র। ভূমি দখলে ব্যর্থ হয়ে তারা নানান ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত শুরু করে। শেষ পর্যন্ত তারা তথা কথিত নাগরিক উদ্যোগের নামে একটি সংগঠনের আশ্রয় নেয়। এই নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে শনিবার লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের জায়গা জবর দখল করে স্কুল নির্মাণের চেষ্টা চালায়।
তিনি আরো জানান, নাগরিক উদ্যোগের আগমনে বাঙালিরা সরই এলাকার সকল প্রবেশর পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রর্দশন করে। শেষ পর্যন্ত বাঙালিদের প্রতিরোধের মুখে নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। একজন বাঙালি বেঁচে থাকতে বাঙালিদের এক ইঞ্চি ভূমি বেদখল হতে দেয়া হবে না বলেও তিনি জানান। তবে এ বিষয়ে নাগরিক উদ্যোগের কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ঢাকা থেকে নাগরিক উদ্যোগের প্রতিনিধি দলের সরই আগমনের খবরে স্থানীয় বাঙালিদরে মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ওই প্রতিনিধি দল লামায় না এসে লোহাগাড়া থেকে ফিরে গেছে শুনেছি। সকল প্রকারের পরিস্থিতি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়ন করা ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।