রবিবার, ০৪ জুন ২০২৩, ০৮:৫৯ অপরাহ্ন

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ২৩ পঠিত

সম্প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার বিষয়ে গৃহীত প্রস্তাবের (রেজল্যুশন) পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা সংকটসহ তার সম্ভাব্য উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন গুতেরেস ও আব্দুল মোমেন।

এ সময় তাঁরা এই সংকট সমাধানে আসিয়ানের কার্যকর নেতৃত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ মহাসচিব ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। জোর করে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাঁদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফেরাতে জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে গুতেরেস এ কথা বলেন। এই প্রেক্ষাপটে আব্দুল মোমেন ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন’ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে সার ও শস্য আমদানির মাধ্যমে খাদ্যসংকট মোকাবিলায় সহায়তা করে।

গুতেরেস জানান, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসে সারের কাঁচামালের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে, যা বাংলাদেশ সাশ্রয়ী মূল্যে আমদানির কথা বিবেচনা করতে পারে।

জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বস্ত করেন, বাংলাদেশ এই সুযোগ কাজে লাগানোর কথা বিবেচনা করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়নের গতিধারার প্রশংসা করেন গুতেরেস। বাংলাদেশ আগামী বছরগুলোতে বিশেষ করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে আরও সাফল্য অর্জন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শীর্ষ সেনা ও পুলিশ সদস্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক শান্তি নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশের ধারাবাহিক নেতৃত্বের প্রশংসা করেন গুতেরেস।

চলমান বৈশ্বিক সংঘাত, আর্থিক-জ্বালানি-খাদ্যসংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা কোরেসি, সংস্থার ডিপার্টমেন্ট অব পিসবিল্ডিং অ্যান্ড পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্সের (ডিপিপিএ) আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি ডিকার্লো ও পিস অপারেশন বিভাগের আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁপিয়েরে ল্যাক্রুয়া সঙ্গে বৈঠক করেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির সঙ্গে বৈঠকের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষভাবে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘ সভাপতির সঙ্গে ‘সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন’ বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্যোগে মন্ত্রিপর্যায়ের একটি নতুন ফোরাম প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন।

উদ্যোগটির জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের অসাধারণ নেতৃত্ব, কার্যকর সম্পৃক্ততা ও উল্লেখযোগ্য অবদানের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে জাতিসংঘের শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের (পিবিসি) চেয়ারম্যান থাকাকালে ২০২২ সালে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন ডিপিপিএর আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি ডিকার্লো।

জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল বৈঠকে ভবিষ্যতে সংস্থার শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে যৌথ উদ্যোগে শান্তিরক্ষী মোতায়েনে সম্প্রতি বাংলাদেশ ও গাম্বিয়ার মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় চুক্তিকে স্বাগত জানান। তিনি আশ্বস্ত করেন, তাঁর বিভাগ এমন উদ্যোগকে উৎসাহিত করবে, যাতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে অন্যান্য দেশ উপকৃত হতে পারে।

এই প্রেক্ষাপটে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশনে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রতিশ্রুতিসহ প্রয়োজনে আরও শান্তিরক্ষী ও সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য ঢাকার প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

বৈঠকগুলোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Let's check your brain 4 + 5 =

একই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved 2022 CHT 360 degree