বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:০০ অপরাহ্ন

মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় গত চারদিনে ৫০ জান্তা সেনা নিহত

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৪৭ পঠিত

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় অন্তত ৫০ জান্তা সেনা নিহত হয়েছে। পিপলস ডিফেন্স ফোর্স গ্রুপ (পিডিএফ) এবং জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন (ইএও) সারা দেশে শাসকদের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে যাওয়ায় গত চারদিনে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়।

মিয়ানমারে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় কমপক্ষে ৫০ জান্তা সেনা নিহত হয়েছে। দেশটির জান্তাবিরোধী পিপলস ডিফেন্স ফোর্স গ্রুপ (পিডিএফ) এবং জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোর (ইএও) যোদ্ধাদের হামলায় সারা দেশে গত চার দিনে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ঘটনাগুলো ঘটেছে মিয়ানমারের সাগাইং, ম্যাগওয়ে, মান্দালে তানিনথারি অঞ্চল এবং চিন, শান, সোম এবং কারেন রাজ্যে। তবে হতাহতের সংখ্যা যাচাই করা হয়নি।

স্থানীয় সময় বুধবার সাগাইং অঞ্চলের ইয়ানমাবিন টাউনশিপে ৫ সেনা নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছে। ১৮টি প্রতিরোধ গোষ্ঠী নিয়ে গঠিত ইউনিয়ন লিবারেশন ফ্রন্ট (ইউএলএফ) কিয়াউক কোন গ্রামের কাছে ১০০ সৈন্যের একটি সামরিক ইউনিটের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। পরে নিকটবর্তী মনিওয়া শহরে অবস্থিত নর্থ ওয়েস্ট মিলিটারি কমান্ডের সদর দপ্তর তাদের স্থল সেনাদের সাহায্য করার জন্য সংঘর্ষের স্থানে হাউইৎজার ব্যবহার করে চারটি দূরপাল্লার গোলা নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে ছয় প্রতিরোধ যোদ্ধা আহত হয়।

প্রতিরোধ দলগুলো গোলাবারুদসহ সামরিক অস্ত্রও জব্দ করে।

দেশটির জান্তা সরকারবিরোধী ছায়া সরকার বলে পরিচিত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, রকেট চালিত গ্রেনেড ব্যবহার করে গত মঙ্গলবার মান্দালয় অঞ্চলের সিন্টগু টাউনশিপের শোয়ে পাই গ্রামের পুলিশ স্টেশনে হামলা চালিয়েছে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স গ্রুপ (পিডিএফ)।

মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, বন্দুকযুদ্ধে ওই অঞ্চলের থানার পুলিশ প্রধানসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছে। মন্ত্রণালয় আরো দাবি করেছে, সোমবার মান্দালয় অঞ্চলে ১৫ জন সেনা নিহত হয়েছে।

মায়াং পিডিএফ-এর ড্রোন ইউনিট মায়াং ইউএভি ফাইটার বলেছে, ছয়টি প্রতিরোধ গোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে তারা বৃহস্পতিবার সকালে ম্যাগওয়ে অঞ্চলের মিয়াইং শহরের একটি গ্রামে বিশ্রামরত সামরিক ইউনিট এবং সামরিক লজিস্টিকবাহী যানবাহনে বোমা হামলা চালায়। এতে অনেক সেনা হতাহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই দিন সন্ধ্যায় দলগুলো জান্তা ইউনিট ও লজিস্টিক গাড়িতেও পাঁচটি ড্রোন বোমা ফেলে। এতেও অনেকে নিহত হন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে মিয়ানমারের কান্নি গ্রামে জান্তা ঘাঁটিতে রেশন ও গোলাবারুদ পরিবহনকারী জান্তা ইউনিট, সামরিক লজিস্টিক যানবাহন মঙ্গলবার থেকে একাধিক ল্যান্ড মাইন অ্যামবুস এবং ড্রোন হামলার মুখোমুখি হয়েছে।

প্রতিরোধ গোষ্ঠীটি স্থানীয় বাসিন্দাদের অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ থেকে দূরে থাকার এবং যুদ্ধের শব্দ শুনলে বোমা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ম্যাগওয়ে অঞ্চলেও শাসক বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। সেখানে জান্তার গোলাগুলিতে এক বাসিন্দা আহত হয়েছেন।

তানিনথারিত অঞ্চলেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওক অ্যাওয়ে কলাম দাওয়েই বলেছে, অন্যান্য স্থানীয় প্রতিরোধ গোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে তারা বৃহস্পতিবার তানিনথারি অঞ্চলের দাওয়েই টাউনশিপের মাউং মে শাউং গ্রামের কাছে সামরিক চেকপয়েন্টে হামলা করে। এতে দুজন সেনা নিহত এবং তিনজন আহত হয়।

২০২১ সালের ফেব্রয়ারি মাসের শুরুতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এরপর গণতন্ত্রের দাবিতে রক্তাক্ত সংগ্রামে লিপ্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে বিভিন্ন গোষ্ঠী সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু করে। পিডিএফ এবং ইএও গোষ্ঠীগুলো সরকারি লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ অব্যাহত রাখার কারণে জান্তা সরকার ও বাহিনী এখন প্রতিদিনই ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সূত্র: দ্য ইরাবতী

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Let's check your brain − 2 = 4

একই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved 2022 CHT 360 degree