বান্দরবান জেলার সর্বদক্ষিণে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের তুমব্রু গ্রামের মানুষ অনেকটা স্বনির্ভর কৃষিকাজে। প্রতিদিন সীমান্তের জিরো লাইনে থাকা কয়েক হাজার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা তাদের মলমূত্র সরাসরি খালে পেলে স্থানীয়দের কৃষিক্ষেতসহ পরিবেশকে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে ফেলেছে।
রোহিঙ্গা শিবিরে নেই কোন স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন। তাই প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মানববর্জ্য সরাসরি পড়ছে খালের পানিতে। মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে খাল। সেই পানিতেই চলছে সীমান্তে থাকা প্রায় ১ হাজার মানুষের চাষাবাদসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ।
মানুষের মলমিশ্রিত পানি ব্যবহারে শরীরে প্রবেশ করতে পারে মারাত্মক জীবাণু। যা থেকে দেখা দিতে পারে সংক্রমিত রোগ। এমনটাই জানালেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র পরিদর্শক। নাফ নদীর উপশাখা ঘুমধুম খালে আগের মতো আর জোয়ার-ভাটা হয় না। ফলে এসব পানিতে মানুষের মল সরাসরি পড়ছে বলে পানি দূষিত হচ্ছে। এই পানি ব্যবহারে হতে পারে টাইফয়েড, কলেরা, ডায়রিয়াসহ, নানা ধরনের চর্মরোগ।
সরজমিনে সীমান্ত পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, রোহিঙ্গার প্রতিটি বাড়ির টয়লেটে প্লাস্টিক পাইপ যুক্ত করে মলমূত্র সরাসরি খালে ফেলছে। সেই খালের পানিতে অনেকেই হেঁটে পারাপার হচ্ছে। আবার অন্যদিকে স্থানীয়রা সেচ মেশিন দিয়ে পানি তুলছে কৃষি কাজেও।
শূন্যরেখার আশ্রিত রোহিঙ্গাদের কারণে খালের পানি দূষণের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদারকি করছে না শুন্যরেখায় দায়িত্বে থাকা আইসিআরসি এনজিও। তাদের পক্ষ থেকে কোন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেছেন, যখন রোহিঙ্গা এখানে ছিল না তখন গ্রামের মানুষ খালে গিয়ে গোসল করত, কৃষি জমিতে পানি দিত, এমনকি বেশিভাগ লোকেরা বাড়ির প্রয়োজনে ব্যবহার করেছে ঘুমধুম খালের পানি। রোহিঙ্গাদের টয়লেটের মলমূত্রসহ বিভিন্ন আবর্জনা পানিতে ফেলার কারণে এখন কেউ আর খালের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। ।
তিনি আরো বলেন, জিরো লাইনে খাদ্য, বস্ত্র, চিকিংসা, সেবাদানকারী এনজিও আইসিআরসি কেন স্বাস্থ্য সম্মত স্যানিটেশন দিচ্ছে না। এ বিষয়ে তাদের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, জিরো লাইনের রোহিঙ্গাদের এসব মলমূত্র সরাসরি খালে ফেলা অব্যাহত রাখে তাহলে স্থানীয় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করবে বলেও জানিয়েছেন ঘুমধুম সীমান্ত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।