শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:০২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দালাল-বেঈমানের জন্মদাতা কুখ্যাত ইব্রাহিমকে পাহাড়ি জনগণ কখনই ক্ষমা করবে না! টেকনাফে আদালতের আদেশ অমান্য করে জমি দখলের চেষ্টা খাগড়াছড়িতে অটোরিকশা চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার থানচি বাজার সড়কের বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে ফিলিস্তিন সংকট:বেসামরিক নাগরিকদের গাজা ত্যাগের জন্য সময় নির্ধারণ করাই ইসরাইলের উদ্দেশ্য কুতুবদিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা ইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করলো তুরস্ক মাস্ক পরে অনুশীলনে বাংলাদেশ, দিল্লিতে ম্যাচ নিয়েও শঙ্কা গর্জনিয়ায় পানিতে ডুবে হেফজখানার ছাত্রের মৃত্যু পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের রানের পাহাড়

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৪১ পঠিত

মিয়ানমার থেকে জাতিগত নিধন ও দমন-পীড়নের শিকার হয়ে বাস্তুচ্যুত প্রায় দশ লাখ নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। প্রাথমিকভাবে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আশ্রয় দেয়া হলেও, ক্রমেই এই জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের পরিবেশ-প্রতিবেশ- অর্থনীতি ও আইনশৃংখলার জন্য হুমকি ও বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষ ও বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়ায় এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর পেছনে ভূরাজনীতিরও একটা প্রভাব রয়েছে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারের ওপর আরও চাপ প্রয়োগ করতে হবে।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের ‘রোহিঙ্গা সংকট- সীমান্ত পরিস্থিতি- ভূরাজনীতি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

গোলটেবিল বৈঠকে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, যারা কথায় কথায় স্যাংকশন দেয় তাদের উচিত মিয়ানমারের ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে এটা দেওয়া। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে তাদের বলা উচিত এভাবে চলতে পারে না। সুইফট সিস্টেম থেকে মিয়ানমারকে বাদ দেওয়া উচিত। কূটনৈতিকভাবে এই সমস্যার সমাধানের দিকে আমাদের এগোতে হবে। সমস্যার কথা চিন্তা করে আমাদের কিছু মিসাইল কক্সবাজারের দিকে মোতায়েন করা উচিত। সীমান্ত এলাকায় ভারত ও চীনের কিছু ইপিজেড বসিয়ে দেওয়া উচিত। পর্দার আড়ালে মিয়ানমারের সঙ্গেও একটি ডিপ্লোম্যাসি করা উচিত।

সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমদ বলেন, মিয়ানমার আর্মির বিরুদ্ধে সেখানকার অভ্যন্তরীণ শক্তিগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটা প্রক্রিয়া আমরা দেখছি। সীমান্তে আমরা নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক রেখেছি। তবে ডিপ্লোম্যাসির ক্ষেত্রে অপ্রতুলতার কথাও সামনে আসছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এই সংকট বেশিদিন দীর্ঘায়িত হলে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে থাকা আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদেরও পাশে টানার চেষ্টা করছে। রোহিঙ্গা যুবকরা যদি তাদের মাতৃভূমি জন্য লড়াই শুরু করে তাহলে কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে!

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, অং সান সু কি ক্ষমতা হারানোর পর রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের মনোযোগে পরিবর্তন এসেছে। ক্ষমতা দখলকারীরা দুর্বল থাকায় সেই সুযোগ নিচ্ছে অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীগুলো। আরাকান আর্মিসহ অন্যরাও নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই সুযোগটা আন্তর্জাতিক বিজনেস কমিউনিটিও নিচ্ছে, অস্ত্র ব্যবসা বাড়ছে।

তবে আন্তর্জাতিক আদালতে দুটি জাজমেন্ট রোহিঙ্গাদের পক্ষে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেটি বুঝেই মিয়ানমারের জান্তারা একটি সংঘাত চাইছে। তারা এর সঙ্গে বাংলাদেশকে জড়াতে চাইছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ বলেন, মিয়ানমার আর্মির এই মুহূর্তে শক্তি থাকলেও বাংলাদেশে আক্রমণ করার সক্ষমতা নেই। আমরা ডিফেন্সিভ অবস্থায় আছি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন ও ভারতের কী অবস্থান সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ২০১৭ সালে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছিল। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা জোরদার অব্যাহত রাখতে হবে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. আব্দুর রব খান বলেন, দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে যথেষ্ট কথাবার্তা হয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এখনও তেমন কোনও অগ্রগতি হয়নি। বরং পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। সম্প্রতি সীমান্তের ওপারে সংঘাতে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আরও পেছনে চলে যাচ্ছে। মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় জান্তা সরকার দুর্বল থাকায় ইচ্ছাকৃতভাবেই এমনটি করতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে সেটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এটি বেড়ে চললেও আমরা কিন্তু ভিকটিম না। মিয়ানমারের আচরণ সবার জন্যই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ এটিকে ভালোভাবেই মোকাবিলা করছে।

বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন এডিটরস গিল্ডের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত। এটি সরাসরি সম্প্রচার করে বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তর টেলিভিশন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Let's check your brain 72 − 70 =

একই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved 2022 CHT 360 degree