বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৪:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দালাল-বেঈমানের জন্মদাতা কুখ্যাত ইব্রাহিমকে পাহাড়ি জনগণ কখনই ক্ষমা করবে না! টেকনাফে আদালতের আদেশ অমান্য করে জমি দখলের চেষ্টা খাগড়াছড়িতে অটোরিকশা চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার থানচি বাজার সড়কের বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে ফিলিস্তিন সংকট:বেসামরিক নাগরিকদের গাজা ত্যাগের জন্য সময় নির্ধারণ করাই ইসরাইলের উদ্দেশ্য কুতুবদিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা ইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করলো তুরস্ক মাস্ক পরে অনুশীলনে বাংলাদেশ, দিল্লিতে ম্যাচ নিয়েও শঙ্কা গর্জনিয়ায় পানিতে ডুবে হেফজখানার ছাত্রের মৃত্যু পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের রানের পাহাড়

UPDF নয়, শ্রী লারমাকে ঠকিয়েছেন তার চামচারা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০২২
  • ২৬ পঠিত

আগের লেখায় বলেছিলাম গত এক দশকে UPDF কীভাবে নিজেদের লড়াই পোস্টফোন (স্থগিত) করে JSS কে সহযোগিতা প্রদান করেন। আমার স্পষ্ট মনে আছে বছর দুয়েক আগে ২রা ডিসেম্বরে চুক্তি বাস্তবায়ন দাবি জানাতে গিয়ে সেনা বাহিনী UPDF”এর উপর চড়াও হয়। অথচ গত ২৪ বছরে JSS’এর ক্ষেত্রে এমনটা ঘটেনি। পাহাড়ে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টিসহ চুক্তি বাস্তবায়নে UPDF কি করে নাই। আসল চুক্তি বিরোধী ও বেইমান তো লিডারের ডান -বাম পাশের মানুষগুলো। তারাই শ্রী সন্তু লারমাকে ঠকিয়ে স্বার্থ হাসিল করেছিলেন।

জুম্ম জাতীয়তাবাদও চুক্তি বাস্তবায়ন JSS ‘ এর ফান্ডামেন্টাল এলিমেন্টস। আদিবাসী ইস্যুটিকে শ্রী সন্তু লারমার সামনে এনে তাকে গিলানো হলো। যিনি কোনদিন এই ইস্যুটি শুনেননি এবং জানতেনও না। পাকিস্তান আমলের জেনারেশন কিছুটা উগ্র প্রকৃতির হলেও সহজে অন্যের কথা বিশ্বাস করে থাকেন। এটাই তাদের সরলতার বৈশিষ্ট্য। এটা দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা স্বার্থান্বেষী ভালো করে জানতেন। শুধু তাই নয়, তারা শ্রী সন্তু লারমাকে মনোস্তাত্বিকভাবে মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত রিড করতে পারতেন। তারা লিডারকে বুঝালেন! স্যার চুক্তি বাস্তবায়ন তো অনিশ্চিত , বরং চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আন্দলোন না করে আদিবাসীর স্বীকৃতি নিয়ে আন্দোলন করা উত্তম হবে। কেননা, এতে আন্তর্জাতিক চাপে বাংলাদেশ আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হবে। তখন এটি হবে চুক্তির বাপ। পাকিস্তান আমলের মানুষটি সহজে বিশ্বাস করে সম্মতি দিলেন। অথচ এই গোষ্ঠীটি জানে বাংলাদেশ জীবনেও স্বীকৃতি দেবেনা। কিন্তু তাদের লক্ষ্য বিদেশ ভ্রমণ ও NGO করা।

এই গোষ্ঠীটি নিউইয়র্কে পারমেন্ট্যান্ট ফোরামে খুব সম্ভবত ২০০৬ সাল থেকে যোগদান করতে থাকেন। ২০১১ সাল পর্যন্ত মঙ্গল বাবুরা স্পীচের ফ্লোর পেতেন না। তখন সাইড ইভেন্টে পার্টিসিপেট করে ডিসকাশন করার সুযোগ পেতেন মাত্র। কিন্তু, লিডারের চোখে ঐটা বিরাট কিছু। কিন্তু তিনি জানতেন না আসলে তারাও আমাদের মত আদিবাসী যাদের অবস্থা আমাদের থেকেও বেশি শোচনীয়। প্রসেস জানতেন না বলে তারা স্পিচের ফ্লোর পেতেন না । কারণ শত শত আদিবাসী সংগঠনকে ফ্লোর দেওয়া সম্ভব নয়। বছর চারেক পর রাজা বাবুর সহযোগিতায় ফ্লোর পেতে থাকেন। অর্থাৎ ৪-৫টা অর্গানাইজেশন জয়েন্ট স্টেটমেন্টের মাধ্যমে। একটা পেপার রেডিং পড়ে আসলে লিডার তো মহাখুশি। কিন্তু, লিডার জানতেন না আসলে যারা শুনেছেন তারাও সবাই আমাদের থেকেও বেশি পিছিয়ে পড়া আদিবাসী। এর মধ্যে তারা খুঁজে পান প্রজেক্টের এক্সেস। তারা লিডারকে ঘুমের ঘরে রেখে অর্থশালী হয়ে উঠলেন। স্বল্প শিক্ষিত কমলাসেন বাবুকে দিয়ে পঙ্গু সমিতি দাঁড় করিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের পঙ্গুদের নামে পার্মানেন্ট ফোরাম থেকে অর্থ খোঁয়াতে লাগলেন। এর অর্থ পাহাড়ের পঙ্গুরা পাওয়া তো দূরের কথা স্বয়ং সংঘাতে পঙ্গুত্ব বরণ করা দলের কর্মীরা পাননি। আর বাবু কমলাসেন তো অর্থও দেখেননি। এছাড়াও অর্থ খোয়াতে লাগলেন শিফটিং কাল্টিভেশন (জুম চাষ) ডেভেলপমেন্ট , এনভায়রনমেন্ট , ফরেস্টেশন , সাস্টেইনএবল ডেভেলপমেন্ট , হিউমান রাইটস , ইমপাওয়ার্মেন্ট ইত্যাদি। শ্রী সন্তু লারমা তো এসব বিষয়ে অন্ধকারে। অথচ তাকে বলা হতো জাতিসংঘে আমরা লবিং এ শক্তিশালী হয়ে ওঠছি এবং কোন এক সময় রাষ্ট্র আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হবে।

এভাবে গত একটি দশক লিডারকে ভুলবাল বুঝিয়ে চুক্তি আন্দোলন থেকে দূরে রাখলেন। অন্যদিকে লিডারের বয়সেটাও চলে যায় আঞ্চলিক পরিষদে। এভাবে চুক্তি ও জুম্ম জাতীয়তাবাদ আদিবাসীর চাপে পরে গিয়ে চিৎপটাং। অর্থাৎ , দলের স্বার্থবাদী মহলরাই চুক্তি বাস্তবায়ন ইস্যু ও জুম্ম জাতীয়তাবাদ নির্মূল করেছিল। দলের এই স্বার্থবাদী মহল অর্থ পাহাড় করে দলের মধ্যে ক্ষমতার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেন । এবার তারা লিডারের কানে জবতে লাগলেন স্যার UPDF একমাত্র চুক্তির বড় বাঁধা। UPDF নির্মূল না হলে চুক্তি বাস্তবায়ন হবেনা এবং চুক্তিবাস্তবায়ন না হলে আপনার ইতিহাস কিন্তু ডাস্টবিনে। তারা জানেন পাকিস্তান আমলের মানুষ বেশি সম্মান ও নাম – খ্যাতি খুঁজে থাকেন। এই গোষ্ঠী দলের মধ্যে অন্যদের ক্ষমতায় দেখতে চান না। তাই তারা লিডারের কাছে ভালো সাজতে লিডারকে নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু, আসলে সব ফাঁকা ।
তারা লিডারকে ইতিহাসে কুখ্যাত খুনি বানিয়ে হলেও ক্ষমতা চাই।

মনে রাখবেন JSS কেও কিন্তু এই গোষ্ঠীটি বিভক্ত করেছিল। তারা লিডারের কানে জব মেরে শ্রী পেলে বাবু, শ্রী রূপায়ণ দেওয়ান, শ্রী সুধাসিন্ধু খীসা, শ্রী চন্দ্রশেখর এবং অন্যন্য নেতাদের লিডার থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন। তা না হলে তারা অর্থ ও ক্ষমতার স্বাদ পাবেননা।
এর মধ্যে দিল্লি ঠাকুজ্জি। সেও থাকে তার ধান্দায়। তাকে প্রতিমাসে মোটা অঙ্ক দিয়ে দিল্লিতে রাখা হয় ইন্ডিয়াকে নিজের পকেটে রাখতে। সে না পারে হিন্দি না পারে ইংরেজি। ইন্ডিয়া -তিন্দিয়া পুনে দিয়ে তার কাজ হিন্দি মুভি দেখা। শত শত হিন্দি মুভি দেখে সে সব শিখে পেলেছে। সকাল -বিকাল লিডারকে ফোন দিয়ে মগজ ধোলাই সহ ধাপ্পাবাজি করতে থাকেন । বাথরুম থেকে কল করে বলে স্যার আমি অমুক পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে ডিস্কাস করছি, এই সেই ব্লা ব্লা।

আমি থাকতে চিন্তা করবেন না স্যার। সে ভালো করে জানে কি বললে লিডারের মন খুশি এবং চাঙ্গা হয়। ঐদিকে সন্ধ্যায় বিল্ডিং এর ছাদে হাওয়া খেতে খেতে ছেলেদের বলে লিডার মরলে তো আমিই সভাপতি হবো, কি বলেন ? তার ছেলেরা তো তার থেকেও বেশি শেয়ানা। তারাও বলে মহোদয় লিডারের পরে আপনাকে ছাড়া তো আর কাউকে দেখছিনা, আপনিই একমাত্র যোগ্য। ঠাকুজ্জি করে লিডারের চামচা , আর তার ছেলেরা করে তার চামচা। ঠাকুজ্জি লিডার থেকে স্বার্থ হাসিল করে এবং তার ছেলেরা তার থেকে স্বার্থ হাসিল করে কেউ ইউরোপ যায় এবং কেউ পড়ালেখা শেষ করে দিল্লি থেকে চলে যায়। গত ২৪টি বছর সে দিল্লিতে হিন্দি মুভি দেখা ছাড়া কিছুই করেনি। তার ভরসায় থাকায় ইন্ডিয়াও হাতছাড়া হয়ে যায়।

লিডারকে UPDF নয় , ঠকিয়েছেন তার চামচারা। ইন্ডিয়া হাতছাড়া হওয়া , চুক্তি ইস্যু ও জুম্ম জাতীয়তাবাদ সবাশাল বানানো , মিথ্যা আশার বাণী শুনিয়ে অঞ্চলিক পরিষদে লিডারের বয়স শেষ করে দেওয়া সবই তার ঘনিষ্ট ডান -বাম পাশের মানুষগুলো করেছে। অথচ যে UPDF দীর্ঘ এক দশক লিডারের মুখের দিকে তাকিয়েছিল সেই UPDFএর বিরুদ্ধে নির্মূলের হুঙ্কার দেওয়া হচ্ছে। লিডার মানুষ চিনেন না বলে আজ তার জীবন এবং চুক্তির এই অবস্থা। আজ লিডার UPDF ‘এর কথা শুনলে চুক্তি বাস্তবায়ন না হলেও অন্তত আজ সমগ্র জাতির কাছে মহান হতে পারতেন। এই স্বার্থবাদী মহল লিডারকে কি ক্ষতি করে নাই। হারিয়েছেন ২৪ বছরের বিপ্লবী জীবনের একনিষ্ঠ সহযোদ্ধা সুধাসিন্ধু বাবু ও রূপায়ণ দেওয়ান বাবুদের , চুক্তি বাস্তবায়ন স্পিরিট আদিবাসী ইস্যুর নিচে চাপে পড়ে যায় , বয়সটা অনর্থক শেষ করলেন আঞ্চলিক পরিষদে। আর এখন শেষ বয়সে এই গোষ্ঠী লিডারকে UPDF বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ইতিহাসে কুখ্যাত খুনি বানাতে চাই।

Parish Chakma

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Let's check your brain − 2 = 6

একই ধরনের আরও সংবাদ
© All rights reserved 2022 CHT 360 degree